রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও জননেত্রী পরিষদ নামে দুটি সংগঠনের পক্ষ থেকে শীর্ষ তিনজন আলেমের বিরুদ্ধে আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হেফাজতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আর্জিতে মদীনা সনদের পসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে, যা এক ভয়াবহ ও সুদূর প্রসারী চক্রান্তের সুস্পষ্ট আলামত। যা শুধু হেফাজতে ইসলাম ও এর আমির পর্যন্তই সীমাবদ্ধ বলে আমরা মনে করিনা বরং এটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত। এজন্য আমরা শীর্ষ আলেমদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানাচ্ছি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা নূরুল ইসলাম জেহাদী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্যেকুলারের নামে ইসলাম বিদ্বেষীদের সরকার নিয়ন্ত্রণ না করলে ধর্মপ্রাণ মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, হেফাজতের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই। মামলাটি এখন পিবিআই তদন্ত করছে। আশা করি তাদের তদন্তের পর মামলা আর আগাবে না। সরকারও মামলা নিয়ে আর সামনের দিকে আগাবে না বলে আমরা প্রত্যাশা করি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজধানীর ধোলাইপাড়স্থ নির্মিতব্য ভাস্কর্য দেশের সর্বত্র ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করেছে। শীর্ষ উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়টি ইসলাম সম্মত নয় বলে সর্বসম্মত ফতোয়া প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার জন্য এরই মধ্যে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছি।
আশা করছি প্রধানমন্ত্রীর সাথে খুব শিগগিরই বৈঠক হবে। সেখানে আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গার বিষয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভাস্কর্য বিষয়ে আলেমরা ফতোয়া দিয়েছেন। কিন্তু তারা ভাস্কর্য ভাঙ্গার কথা বলেননি। আর কুষ্টিয়া ভাস্কর্য ভাঙ্গার সাথে যাদের জড়িত বলে বলা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজের সাথে তাদের দেহ ও পোশাকের মিল নেই। আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হয়েছে। যারা এর সাথে জড়িত তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান হেফাজত নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ইসলাম বিদ্বেষী একটি মহল কুষ্টিয়ার ঘটনার দায় উলামায়ে কেরাম ও হেফাজত নেতৃবৃন্দের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা করছে। ষড়যন্ত্রের এমন ঘঢ়ৃণিত পথ পরিহার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। শীর্ষ আলেমদের বিরুদ্ধের মামলা আইনীভাবে মোকাবেলা করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। আইন হাতে তুলে নিতে আলেম উলামারা কোনো দিন কাউকে বলেননি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের উপদেষ্টা মাওলানা আবুল কালাম, নায়েবে আমির মধুপুরের পীর আব্দুল হামিদ, মাওলানা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আব্দুর রকিব অ্যাডভোকেট, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা শফিক উদ্দিন, মাওলানা জসীম উদ্দিন, মাওলানা মুসা বিন ইযহার, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা বশিরুল্লাহ, মাওলানা জিয়াউল হক কাসেমী, মুফতি এনামুল হক মুসা ও মাওলানা শরিফুল্লাহ।